প্রথম আলঃ ২৬-০৮-২০১১
দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী ১৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২২টি মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করছে। বাকিগুলো ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন পেলেও খেয়ালখুশিমতো চলছে। ২০০৯ সালের গোড়ার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যারাসিটামল ওষুধ খেয়ে ২৪ শিশু কিডনি বিকল হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেশের ওষুধ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান নির্ণয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন আ ব ম ফারুকের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। প্রায় দেড় বছর ধরে বাংলাদেশের সব কটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। কমিটির প্রধান আ ব ম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৮২ ও ২০০৫ সালের ওষুধনীতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’ (উত্তম উৎপাদন কৌশল—জিএমপি) অনুসরণের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানই নিয়মকানুন মানছে না। এই প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব ওষুধ উৎপাদন করছে, সেগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। হয়তো অনেকে এসব ওষুধের কারণে মারাও যাচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুক্তাদির প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠন কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুপারিশ করবে না। তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ সুযোগ যেকোনো প্রতিষ্ঠান নিতে পারে। কমিটির মন্তব্য, ডি, ই ও এফ শ্রেণীভুক্ত ৬২টি কারখানা উত্তম উৎপাদন-কৌশল অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাদের সমস্যা প্রচুর এবং তাদের পক্ষে কার্যকর ও নিরাপদ ওষুধ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। প্যারাসিটামল সিরাপে ব্যবহূত প্রোপাইলিন গ্লাইকলের পরিবর্তে ভুলক্রমে ডাই ইথালিন গ্লাইকল ব্যবহার করা হলেও তা নির্ণয়ের কোনো ক্ষমতা নেই এদের। এ ছাড়া যে ওষুধে ৫০০ মিলিগ্রাম থাকার কথা, সে ওষুধে আদতে কতটুকু কী আছে, তাও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিমাপ করতে পারছে না।
২০০৮ সালে রিড ফার্মার প্যারাসিটামলে ডাই ইথালিন গ্লাইকল মেশানো হয়েছিল। এই রাসায়নিকটি ট্যানারিশিল্প ও গ্লাস তৈরিতে ব্যবহার হয়। ডাই ইথালিন গ্লাইকলের কারণে শিশুদের কিডনি বিকল হয় বলে চিকিৎসকেরা জানান। প্রোপাইলন গ্লাইকলের দাম বেশি হওয়ায় রীড ফার্মা সিরাপে ডাই ইথালিন গ্লাইকল মিশিয়েছিল। অন্যদিকে ডি, ই এবং এফ ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানে ওয়াসার পানি সরাসরি ব্যবহার করা হচ্ছে। এদের তাপ ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়—এমন কোনো সুষ্ঠু সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। যেসব উপকরণ নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় (৮-২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) সংরক্ষণ করতে হয়, সেসব উপকরণ নষ্ট হয়ে যায়।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, পরিদর্শনের সময় দেখা গেছে, মানহীন প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধের কাঁচামাল, শ্রমিকের কাপড়চোপড়, বস্তা-কাগজ—সব এক জায়গায় রাখছে। পানি রাখছে বালতি, মগ, বড় পাত্রের মধ্যে। হাতাকাটা গেঞ্জি ও প্যান্ট পরে ওষুধ তৈরি করছেন শ্রমিকেরা। অথচ বিশেষ ধরনের পোশাক পরে ফার্মাসিস্টদের এ কাজ করার কথা।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ: বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান আ ব ম ফারুক বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভূমিকা খতিয়ে দেখা এ কমিটির উদ্দেশ্য ছিল না। তবে পরিদর্শনের সময় তারা দেখেছে, অধিদপ্তর ২৬১টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিলেও বাস্তবে ১৯৩টি প্রতিষ্ঠান আছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই।
দেশের ওষুধ উৎপাদনকারী ১৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২২টি মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করছে। বাকিগুলো ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন পেলেও খেয়ালখুশিমতো চলছে। ২০০৯ সালের গোড়ার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যারাসিটামল ওষুধ খেয়ে ২৪ শিশু কিডনি বিকল হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেশের ওষুধ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান নির্ণয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডিন আ ব ম ফারুকের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। প্রায় দেড় বছর ধরে বাংলাদেশের সব কটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। কমিটির প্রধান আ ব ম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৮২ ও ২০০৫ সালের ওষুধনীতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’ (উত্তম উৎপাদন কৌশল—জিএমপি) অনুসরণের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানই নিয়মকানুন মানছে না। এই প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব ওষুধ উৎপাদন করছে, সেগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। হয়তো অনেকে এসব ওষুধের কারণে মারাও যাচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুক্তাদির প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠন কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুপারিশ করবে না। তবে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ সুযোগ যেকোনো প্রতিষ্ঠান নিতে পারে। কমিটির মন্তব্য, ডি, ই ও এফ শ্রেণীভুক্ত ৬২টি কারখানা উত্তম উৎপাদন-কৌশল অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাদের সমস্যা প্রচুর এবং তাদের পক্ষে কার্যকর ও নিরাপদ ওষুধ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। প্যারাসিটামল সিরাপে ব্যবহূত প্রোপাইলিন গ্লাইকলের পরিবর্তে ভুলক্রমে ডাই ইথালিন গ্লাইকল ব্যবহার করা হলেও তা নির্ণয়ের কোনো ক্ষমতা নেই এদের। এ ছাড়া যে ওষুধে ৫০০ মিলিগ্রাম থাকার কথা, সে ওষুধে আদতে কতটুকু কী আছে, তাও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিমাপ করতে পারছে না।
২০০৮ সালে রিড ফার্মার প্যারাসিটামলে ডাই ইথালিন গ্লাইকল মেশানো হয়েছিল। এই রাসায়নিকটি ট্যানারিশিল্প ও গ্লাস তৈরিতে ব্যবহার হয়। ডাই ইথালিন গ্লাইকলের কারণে শিশুদের কিডনি বিকল হয় বলে চিকিৎসকেরা জানান। প্রোপাইলন গ্লাইকলের দাম বেশি হওয়ায় রীড ফার্মা সিরাপে ডাই ইথালিন গ্লাইকল মিশিয়েছিল। অন্যদিকে ডি, ই এবং এফ ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানে ওয়াসার পানি সরাসরি ব্যবহার করা হচ্ছে। এদের তাপ ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়—এমন কোনো সুষ্ঠু সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। যেসব উপকরণ নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় (৮-২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) সংরক্ষণ করতে হয়, সেসব উপকরণ নষ্ট হয়ে যায়।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, পরিদর্শনের সময় দেখা গেছে, মানহীন প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধের কাঁচামাল, শ্রমিকের কাপড়চোপড়, বস্তা-কাগজ—সব এক জায়গায় রাখছে। পানি রাখছে বালতি, মগ, বড় পাত্রের মধ্যে। হাতাকাটা গেঞ্জি ও প্যান্ট পরে ওষুধ তৈরি করছেন শ্রমিকেরা। অথচ বিশেষ ধরনের পোশাক পরে ফার্মাসিস্টদের এ কাজ করার কথা।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ: বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান আ ব ম ফারুক বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভূমিকা খতিয়ে দেখা এ কমিটির উদ্দেশ্য ছিল না। তবে পরিদর্শনের সময় তারা দেখেছে, অধিদপ্তর ২৬১টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিলেও বাস্তবে ১৯৩টি প্রতিষ্ঠান আছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই।
No comments:
Post a Comment