জাপানে তেজস্ক্রিয় পদার্থের মিশ্রণের প্রভাব পড়েছে পরিবেশের ওপর। দেশটিতে বিকারগ্রস্ত প্রজাপতির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর সংগৃহীত প্রজাপতি গবেষণা করে এর প্রমাণ মিলেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রজাপতির অস্বাভাবিক পরিবর্তন। বৃদ্ধি পেয়েছে বিকারগ্রস্ত পা, শুঙ্গ ও পাখার সংখ্যা। আর বিকারগ্রস্ত এসব প্রজাপতির সঙ্গে তেজস্ক্রিয় পদার্থের সম্পর্ক রয়েছে। গবেষণার ফল সায়েন্টিফিক রিপোর্টস সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছে।২০১১ সালের মার্চে ভয়াবহ সুনামির জেরে ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিপর্যয়ের পরপরই ওই এলাকায় শুককীট (প্রজাপতির জীবন চক্রের প্রথম পর্যায়) অবস্থায় শতকরা ১২ ভাগ প্রজাপতির মধ্যে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। ঘটনার দুই মাস পর জাপানি গবেষকেরা ফুকুশিমাসহ ১০টি স্থান থেকে একটি নির্দিষ্ট প্রজাপতির ১৪৪টি প্রাপ্তবয়স্ক প্রজাপতি সংগ্রহ করেন। দুর্ঘটনার সময় জীবনচক্রের প্রথম ধাপে ছিল সাধারণত এমন প্রজাপতিই সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাব বেশি পড়েছে—এমন এলাকার প্রজাপতির পাখা তুলনামূলক অনেক ছোট এবং এর চোখের বৃদ্ধিও ঘটেছে অসমভাবে।দুর্ঘটনার ছয় মাস পর আবার ওই ১০টি স্থান থেকে প্রজাপতি সংগ্রহ করা হয়। এগুলো গবেষণা করে দেখা যায়, ফুকুশিমা থেকে সংগৃহীত প্রজাপতির বিকারের মাত্রা দুর্ঘটনার দুই মাস পর সংগ্রহ করা প্রজাপতির বিকারের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। গবেষক দলের প্রধান ওকিনাওয়ার ইউনিভার্সিটি অব রিউকিউসের অধ্যাপক জজি ওতাকি বলেন, ‘এটা সব সময়ই ধরে নেওয়া হতো যে, কীটপতঙ্গ হচ্ছে তেজস্ক্রিয় প্রতিরোধকারী। ওই ধারণা অনুযায়ী, আমাদের গবেষণার ফল হয়েছে অপ্রত্যাশিত।’গবেষকেরা বলেন, দূষিত খাদ্যের ফলে প্রজাপতির বিকার হয়েছে। অথচ এসব প্রজাপতির পূর্ববর্তী প্রজন্মে এ ধরনের কোনো বিকার ছিল না।গবেষক দলটি ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই নির্দিষ্ট প্রজাতির প্রজাপতি নিয়ে গবেষণা করছেন। পরিবেশগত পরিবর্তন এই প্রজাতির ওপর ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে। নতুন গবেষণার মাধ্যমে এটাই প্রতীয়মান হয়েছে, প্রাণীকূলের ওপর ফুকুশিমা দুর্ঘটনার প্রভাব এখনো পড়ছে। তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা কমে এলেও প্রাণীকূল প্রভাবিত হচ্ছে। বিবিসি।